রাজশাহী, ১৬ মে — ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে ভারত পদ্মা নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ব্যাহত করে বাংলাদেশের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও মানুষের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজশাহী কলেজে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “ভারত ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের ওপর স্পষ্ট অন্যায় করেছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা চুপ করে থাকবো না। চুক্তি নবায়নের সময় ভারতের ওপর আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে বাংলাদেশ ন্যায্য পানির হিস্যা পায়।”
তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই ফারাক্কা ইস্যুতে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কা অভিমুখে লং মার্চের নেতৃত্ব দেন। এই লং মার্চ ছিল গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের আন্দোলনের অন্যতম মাইলফলক। সেই থেকে দিনটি “ফারাক্কা দিবস” হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
ভারত ১৯৬১ সালে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে এবং ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল এটি চালু করে, যা বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র ১৮ মাইল উজানে মনোহরপুর এলাকায় অবস্থিত। ভারতের দাবি, কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষায় পলি অপসারণের জন্য এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
বাঁধ চালুর পূর্বে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শুষ্ক মৌসুমে পানি ভাগাভাগির বিষয়ে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হবে না। কিন্তু ভারত সে প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।
পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে এই চুক্তির আওতায় ভারত পর্যাপ্ত পানি দেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে পরিবেশবাদী ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের।