ঢাকা, ১৪ মে ২০২৫ — জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। আজ বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে কয়েকশত শিক্ষার্থী অংশ নেন। মূলত তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে নেমেছেন।
শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে পথে একাধিক পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান তারা। কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও রয়েছেন। লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে, তবে আহতের সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, জবি শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা, বিশেষ করে বাজেট সংকট ও আবাসনের ঘাটতি নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার প্রতিবাদেই তারা আন্দোলনে নেমেছেন। গত সোমবার (১২ মে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর পর আজ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইউজিসির কর্মকর্তারা তাদের দাবিগুলো দায়সারা আশ্বাসে উপেক্ষা করেন। ফলে তারা আন্দোলনের মাধ্যমে দাবিগুলো বাস্তবায়নে চাপ সৃষ্টি করতে বাধ্য হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করা হবে। তাদের তিন দফা দাবি হলো—
1. আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জবির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।
2. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাঁট না করেই অনুমোদন দিতে হবে।
3. জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।