প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যা মামলায় ফারিয়া হক টিনার গ্রেপ্তার
২০২৫ সালের ১৯ এপ্রিল, রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৩) ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে নিয়ে হাসাহাসির জেরে, যা পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন, যেখানে আটজনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়।
আজ শুক্রবার (৯ মে) ভোরে রাজধানীর নদ্দা এলাকা থেকে ফারিয়া হক টিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ পর্যন্ত পারভেজ হত্যা মামলায় মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন—আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং আল আমিন সানি (১৯)—বনানী বিদ্যানিকেতনের সাবেক শিক্ষার্থী। তাদেরকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মামলার ৫ নম্বর আসামি হৃদয় মিয়াজীকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মনাইরকান্দি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনার দিন বিকেলে পারভেজ ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন। এ নিয়ে প্রাইম এশিয়ার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় ৩০-৪০ জন তাকে ঘিরে ধরে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও র্যাব মামলার তদন্তে অগ্রগতি সাধন করছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফারিয়া হক টিনা ও আরেক নারী শিক্ষার্থীর ইন্ধনে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ড শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতার একটি দৃষ্টান্ত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি নিরাপদ ও সহনশীল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এ ধরনের ঘটনা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।