কাশ্মীর সীমান্তে ভারতের আকস্মিক হামলার পর আলোচনায় চীনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম
গত বুধবার (৭ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির সীমান্তে হঠাৎই বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায় ভারত। ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামক এই অভিযানে ব্যবহৃত হয় ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। হামলার পর পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের তিনটি রাফাল, একটি সু-৩০এমকেআই, একটি মিগ-২৯ ফালক্রাম এবং একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সেই সঙ্গে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত চীনের তৈরি ‘এইচ-কিউ-নাইন’ মিসাইল সিস্টেম।
চীনের তৈরি এইচ-কিউ-নাইন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মূলত রাশিয়ার এস-৩০০ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের অনুকরণে তৈরি। ১৯৮০-এর দশকে চীন এই প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির কাজ শুরু করে এবং ২০০৯ সালে প্রথমবার এটি উন্মোচিত হয় তাদের জাতীয় সামরিক প্যারেডে।
এইচ-কিউ-নাইন সিস্টেমটি একটি ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর লঞ্চার (TEL) ভিত্তিক ব্যবস্থা। একেকটি ইউনিটে ৬ বা তার বেশি ট্রাক থাকে এবং প্রতিটি ট্রাকে চারটি মিসাইল কনটেইনার রাখা হয়। প্রতিটি মিসাইলের ওজন প্রায় ২ টন এবং দৈর্ঘ্য ৬.৮ মিটার। এটি শত্রুর যুদ্ধবিমান, ক্রুজ মিসাইল, এয়ার-টু-সারফেস মিসাইল এবং স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল গুলি ধ্বংস করতে সক্ষম।
এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে একটি উন্নত রাডার সিস্টেম, যা ১২০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্য শনাক্ত করতে পারে এবং একসাথে ১০০টি লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করতে সক্ষম। একই সময়ে ৫০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুর দিকে মিসাইল ছুঁড়তে পারে এই সিস্টেম। এর মিসাইলগুলো ঘন্টায় প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটে যেতে পারে এবং প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরত্ব ও ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় আঘাত হানতে সক্ষম।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান যতই দাবি করুক না কেন, চীনের তৈরি এইচ-কিউ-নাইন বাস্তব যুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানকে ট্রোল করা হচ্ছে এই বলে যে, ‘বন্ধু দেশ চীন’ তাদের ঠকিয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে—চীনের এত প্রচারিত ‘এইচ-কিউ-নাইন’ কি আদৌ কার্যকর, নাকি শুধুই প্রদর্শনীমূলক? পাকিস্তানের দাবির বিপরীতে ভারতের পাল্টা বক্তব্যে এখনো স্পষ্ট নয়, কে সত্য বলছে। যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা এবং নিরপেক্ষ তথ্য সামনে না এলে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাবে।