গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল অবৈধভাবে মজুদ করার অভিযোগে একটি গোডাউন থেকে ৫.৮ মেট্রিক টন (১১৯ বস্তা) চাল উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় সাহাবুল ইসলাম সাবু (৫০) নামের এক বিএনপি নেতাকে আটক করা হয়েছে। তিনি কামারদহ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব ও মাস্তা গ্রামের মৃত সাকোয়াত হোসেনের ছেলে।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে উপজেলার ফাঁসিতলা বাজার এলাকার একটি গোডাউনে অভিযান চালান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামান। অভিযানকালে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রওশানুল কাওসার মানিক ও থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল অবৈধভাবে মজুদ করার খবরে আমরা অভিযান চালাই। গোডাউন থেকে ৫০ কেজি ওজনের ১১৯ বস্তা, মোট ৫.৮ মেট্রিক টন চাল জব্দ করা হয়। এছাড়াও খাদ্য অধিদফতরের লোগোযুক্ত বেশ কিছু খালি বস্তাও উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, জব্দ করা চালগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করে পুলিশের সহায়তায় উপজেলা খাদ্য গুদামে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে খাদ্য বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে অভিযানের সময় আটককৃত সাহাবুল ইসলাম সাবুকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম। তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফারুক আহম্মেদ বলেন, “চালগুলো সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কিনে সাবু তার গোডাউনে রাখতেন বলে শুনেছি। প্রশাসনের অভিযানে চাল জব্দ ও তাকে আটকের বিষয়টি আমরা জেনেছি। তবে কোনো নেতাকর্মীর ব্যক্তিগত অপরাধ ও অন্যায়ের দায় দল বহন করবে না। আমরা দলীয় সিদ্ধান্তে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তার জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সাহাবুল ইসলাম সাবু সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কম দামে চাল কিনে একটি ভাড়া করা গোডাউনে মজুদ করে রাখতেন এবং পরে তা বেশি দামে খোলা বাজারে ও সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করতেন। এছাড়া কামারদহ ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নির্ধারিত ডিলার ফয়জুর রহমান হলেও, তার কাছ থেকে জোর করে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ওই গোডাউন থেকেই ডিলারের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন সাবু।