চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬১০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬২৮ জন এবং আহত হয়েছেন ১২০৭ জন। মঙ্গলবার (৬ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দেশের বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যাই ৫৬৭টি। এতে নিহত হয়েছেন ৫৮৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১২০২ জন। এছাড়া রেলপথে ৩৫টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ জন। নৌপথে ৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০ জন এবং একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২৯
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে। ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৯ জন এবং আহত হয়েছেন ২২৪ জন। এসব দুর্ঘটনায় তরুণ ও মধ্যবয়সী চালকদের সংখ্যা বেশি ছিল।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণ
চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে ১৩৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৬ জন এবং আহত হয়েছেন ৩৭৭ জন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে, যেখানে ২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩১ জন এবং আহত হয়েছেন ৫১ জন।
দুর্ঘটনার কারণ
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল
সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং ও আলোর অভাব
টার্নিং চিহ্ন না থাকা
মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি
ট্রাফিক আইন অমান্য
উল্টোপথে যান চলাচল
অদক্ষ চালক ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন
অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও বেপরোয়া গাড়ি চালানো
সুপারিশ
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে। এর মধ্যে রয়েছে:
মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ
সড়কে রাতের আলোকসজ্জা নিশ্চিত করা
দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ
যানবাহনের ডিজিটাল ফিটনেস ব্যবস্থাপনা
ধীরগতির ও দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন
সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ
চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ
পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা
রোড সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন
ডিজিটালভাবে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন
আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা
বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি
মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট
মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন স্ক্র্যাপের উদ্যোগ