মোকামা, বিহার – ভারতের বিহার রাজ্যের মোকামা শহরের একটি সরকারি স্কুলে মিড-ডে মিলের খাবার গ্রহণ করে শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিতরণকৃত খাবারের মধ্যে একটি মৃত সাপ পাওয়া গেলেও তা সরিয়ে ফেলা হয়নি এবং শিক্ষার্থীদের তা খেতে দেওয়া হয়।
ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্থানীয়রা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) বৃহস্পতিবার (১ মে) একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। কমিশনের মতে, অভিযোগ যদি সত্য হয়, তবে এটি শিশুদের মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ওই স্কুলে অন্তত পাঁচশ শিক্ষার্থীর জন্য মিড-ডে মিল সরবরাহ করা হয়েছিল। খাবার গ্রহণের পর অসুস্থ হয়ে পড়ে শতাধিক শিশু। এনএইচআরসি বিহার রাজ্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিস্তারিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। রিপোর্টে আক্রান্ত শিশুদের বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থার স্পষ্ট বিবরণ থাকতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ভারতে মিড-ডে মিল কর্মসূচির খাবারে অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক উপাদান থাকার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন রাজ্যে খাবারে মৃত সাপ, গণ্ডগোল পোকা কিংবা বিষাক্ত উপাদান পাওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে ২০১৩ সালে, যখন বিহারেই মিড-ডে মিল খেয়ে ২৩ জন শিশু মৃত্যুবরণ করে। পরীক্ষায় সেই খাবারে মারাত্মক বিষাক্ত কীটনাশক থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
মিড-ডে মিল কর্মসূচির সূচনা হয় ১৯২৫ সালে মাদ্রাজ (বর্তমান চেন্নাই) শহরে। দরিদ্র পরিবারের শিশুদের স্কুলমুখী করা এবং অপুষ্টিজনিত সমস্যা মোকাবিলার লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার এই কর্মসূচি চালু করে। তবে পুষ্টিমান, নিরাপত্তা ও মান নিয়ন্ত্রণে ত্রুটির কারণে বারবার বিতর্কের মুখে পড়ছে এই উদ্যোগ।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে মিড-ডে মিল কর্মসূচিতে আরও স্বচ্ছতা, কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত পরিদর্শনের প্রয়োজন রয়েছে।