ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৩০ এপ্রিল:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জেরে দুই গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সদর ইউনিয়নের চানমনিপাড়া ও মোঘলটুলা গ্রামের মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে মোবাইল চার্জার কেনা-বেচা নিয়ে শুরু হওয়া বিরোধই এই সংঘর্ষের মূল উৎস। বুধবার সন্ধ্যায় চানমনিপাড়ার হালিমা বেগম ও তার ছেলে সাইফুল ইসলাম স্থানীয় একটি চালকলে গেলে মোঘলটুলার তৌহিদ মিয়ার সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়, যা পরে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এর জের ধরে রাতেই দুই গ্রামের শতাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় অনেকের হাতে টর্চলাইট দেখা গেছে, যা সংঘর্ষকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে তা নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে ছুটে যান প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এ সময় ইউএনও মোশাররফ হোসাইন সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পায়ে আঘাত পান। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওসি রফিকুল হাসান গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন, তার চোখের ওপরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার বলেন, “সংঘর্ষে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউএনও মোশাররফ হোসাইন বলেন, “এই সহিংসতার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।”
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পুনরায় সহিংসতা এড়াতে সব ধরনের সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে।