ঢাকা, ২৯ এপ্রিল: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গেজেট প্রকাশ করে মেয়র ঘোষণা করার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি দাবি করেছে, আদালতের রায় একতরফা ছিল এবং ইসির আচরণ রহস্যজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট।
গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, “সম্প্রতি ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলায় আদালতের রায়, এবং তৎপরতার সঙ্গে গেজেট প্রকাশ – সবকিছুই নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের কার্যকলাপ অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।”
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী দাবি করেন, “মামলাটি ৩ বছর ৫ মাসে মাত্র ৩২টি তারিখ পেলেও, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে মাত্র চার মাসে ১৭টি তারিখ দিয়ে মামলাটি তড়িঘড়ি করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ ধরনের ব্যতিক্রমী দ্রুততা মামলার একটি পক্ষকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, মামলার গুরুত্বপূর্ণ হলফনামাগুলো বেআইনিভাবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দাখিল করে আরজি সংশোধন করে ভিন্নধর্মী প্রতিকার চাওয়া হয়। অথচ আদালত কোনো বিচার-বিবেচনা ছাড়াই তা গ্রহণ করে রায় প্রদান করেন, যা বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
নাসীরুদ্দীন বলেন, “নির্বাচন কমিশন মামলায় বিবাদী হয়েও তা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি এবং উচ্চ আদালতে আপিল না করে বরং মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এমনকি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়ার আগেই গেজেট প্রকাশ করেছে কমিশন, যা নজিরবিহীন ও উদ্বেগজনক।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই রায় ঘোষণার আগেই গত বছরের ১৯ আগস্ট ডিএসসিসিতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সে প্রেক্ষাপটে মামলাটি অকার্যকর হওয়া উচিত ছিল। এরপরও আদালতের রায় এবং গেজেট প্রকাশের মধ্যে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা জনসাধারণের সামনে স্পষ্ট করতে হবে।”
এনসিপি মনে করে, নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছাড়া গণতন্ত্র সুসংহত হতে পারে না। বিবৃতিতে দলটি এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়।