ইসলামাবাদ, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ —
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ওয়াজিরিস্তানের হাসান খেল এলাকায় আফগান সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে ৫৪ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) রবিবার (২৭ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
আইএসপিআরের মতে, গত ২৫ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত হাসান খেল সীমান্ত দিয়ে একদল সন্ত্রাসী পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল। সেনাবাহিনী দ্রুত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নামে এবং অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তাদের অনুপ্রবেশ রুখে দেয়। সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর হামলায় ৫৪ জন ‘খারিজ সন্ত্রাসী’ নিহত হয়। এখানে ‘খারিজ’ শব্দটি নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সদস্যদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে। আইএসপিআর জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য বলছে এই সন্ত্রাসীরা ‘বিদেশি কর্তাদের’ নির্দেশে পাকিস্তানে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে অনুপ্রবেশ করছিল।
আইএসপিআর আরও দাবি করে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তোলার সময় এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড স্পষ্ট করে যে, পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে ভারতের ভূমিকা রয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থা মনে করছে, ভারতের কৌশলগত উদ্দেশ্য হলো পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান থেকে মনোযোগ সরিয়ে সন্ত্রাসীদের জন্য সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি করা।
জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে আইএসপিআর বলেছে, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে এ ধরনের ষড়যন্ত্র রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
পাকিস্তানের ইতিহাসে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের একক সংঘর্ষে এত বিপুল সংখ্যক সন্ত্রাসী হত্যার ঘটনা এটাই প্রথম বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যেখানে একাধিক অনিয়ন্ত্রিত পারাপারের পয়েন্ট দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।