সাভার, ২৪ এপ্রিল:
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক শিল্প দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসের ১২ বছর পূর্ণ হলো। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভারে আটতলা ভবন ‘রানা প্লাজা’ ধসে প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৫ জন গার্মেন্টস শ্রমিক। আহত হন আরও প্রায় দুই হাজার মানুষ। এ দুর্ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, নাড়া দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত এই ট্র্যাজেডি এক যুগ পার করলেও এখনো থামেনি স্বজনদের কান্না, কাটেনি আহতদের আতঙ্ক। সবচেয়ে দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, এত বছর পরও বিচারকাজ সম্পূর্ণ হয়নি। মামলার অগ্রগতি নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোট ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ৮৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে আরও ৮৪ জনের। সর্বশেষ ২১ এপ্রিল চারজন সাক্ষ্য দেন, যাদের মধ্যে তিনজনের জেরা সম্পন্ন হলেও একজনের জেরা অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন ২৮ এপ্রিল।
অন্যদিকে, একই ঘটনার ভিত্তিতে ইমারত নির্মাণ আইনে দায়ের করা মামলাটি উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রয়েছে। অভিযোগ গঠনের আট বছর পেরিয়ে গেলেও এ মামলায় এখনও শুরু হয়নি সাক্ষ্যগ্রহণ।
দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও অনেক আহত শ্রমিক এখনও শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেননি। স্বজন হারানো পরিবারগুলোর কষ্ট, দুঃখ ও অনিশ্চয়তা আজও একইভাবে বিদ্যমান।
শ্রমিক সংগঠন এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিও জানানো হয়েছে।