ঢাকা শহরে স্বল্প দূরত্বে দ্রুত যাতায়াতের অন্যতম জনপ্রিয় বাহন হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ‘বাংলার টেসলা’ খ্যাত এই পরিবেশবান্ধব যান যেমন সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী, তেমনি বহু নিম্ন আয়ের মানুষের জীবিকার উৎসও বটে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই বাহনের বেপরোয়া চলাচল রাজধানীবাসীর জন্য এক নতুন উদ্বেগের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পথচারী ও যাত্রীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলার কিছুটা শিথিলতার সুযোগে অনেক চালক ট্রাফিক আইন ও সাধারণ নিয়মের কোনো তোয়াক্কা করছেন না। অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক এমনকি মহাসড়কেও দেখা মিলছে অটোর দৌরাত্ম্যের। ফলে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা, সৃষ্টি হচ্ছে যানজট এবং জনদুর্ভোগ।
একজন নিয়মিত যাত্রী বলেন, “এরা সিগনাল মানে না, রং সাইডে চলে, যত্রতত্র থামে। ছোটখাটো ঘটনাতেই যাত্রীদের সঙ্গে তর্কে জড়ায়।” অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজধানী থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া উচিত।
অন্যদিকে, চালকেরাও নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেছেন। তাদের ভাষায়, “আমরাও এই দেশের নাগরিক। আমাদের গাড়ি চলতে না দিলে আমরা খাবো কী?” কেউ কেউ আরও একধাপ এগিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “চালাতে না দিলে দেশে যুদ্ধ লেগে যাবে।”
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান জানান, অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। তিনি বলেন, “চালক, মালিক ও যাত্রী—সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষার দিক বিবেচনায় রেখে একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সবার সহযোগিতা চাই।”
নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার জন্য আলাদা লেন, নির্দিষ্ট রুট এবং নিবন্ধনের আওতায় আনার মতো উদ্যোগ দ্রুত গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যথায়, পরিবেশবান্ধব এই যান ভবিষ্যতে শহরের সড়ক ব্যবস্থাপনায় আরও বিশৃঙ্খলা ডেকে আনতে পারে।