যশোর, ২২ এপ্রিল:
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দৃঢ়ভাবে বলেছেন, দেশে মাদক নির্মূলের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিতে হবে এবং এক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি বরদাশত করা হবে না। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “মাদক বন্ধে অ্যাকশন না নিলে চাকরি থাকবে না। আমরা নিরাময় কেন্দ্র খুলতে চাই না, মাদক বন্ধ করতে চাই।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে যশোরে সরকারি বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় তিনি মাদকবিরোধী অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “পুলিশকে মাঠে নামতে হবে। তবে তারা সিভিল ড্রেসে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না।” তিনি পুলিশ প্রশাসনের ভেতরে তেলবাজির সংস্কৃতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “পুলিশে তেলবাজির সংস্কৃতি আবার ফিরে আসছে, এটা বন্ধ করতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কমিউনিটি পুলিশিং জোরদারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে পেরেছি। বদলি বাণিজ্যও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, “ওসিদের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।” পাশাপাশি তিনি তদবিরের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। উপদেষ্টা জানান, “আমার উপদেষ্টা হওয়ার পর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে, যাদের অনেককেই আমি চিনি না। কেউ আমার নামে তদবির করতে এলে আগে তাকে চা-নাস্তা খাওয়ান, পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে উদ্যোগ নিতে হবে এবং জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে নজরে রাখতে হবে।”
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, যশোর সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশের খুলনা বিভাগের ডিআইজি মো. রেজাউল হক, জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহানসহ সরকারি ও প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।