প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে তিনি বিশ্বের জন্য আশার বাতিঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।
দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববাসীর উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ হয়ে উঠতে চায়, যা পৃথিবীর সামনে আশা ও সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান, নতুন করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি গঠনের জন্য এবং সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষুদ্রঋণের ভূমিকা নিয়ে চিন্তা করতে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ এমন একটি পর্যায়ে আছে, যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ—বিশেষত তরুণ প্রজন্ম—ন্যায়বিচার, মর্যাদা, ঐতিহ্য ও সুযোগের ভিত্তিতে একটি নতুন ভবিষ্যৎ নির্মাণে এগিয়ে যেতে পারে। এ ভবিষ্যতের মূলভিত্তি হবে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়ন।
তিনি বলেন, আমরা এখন এমন এক যুগ পার করছি, যেখানে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা হুমকির মুখে, জলবায়ু সংকট গভীরতর হচ্ছে, ভূরাজনৈতিক টানাপড়েন বাড়ছে এবং মানবিক বিপর্যয়ও তীব্রতর হচ্ছে। প্রযুক্তি, শাসনব্যবস্থা ও নীতিমালার দ্রুত পরিবর্তন আমাদের পুরোনো ধ্যানধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে সহযোগিতা বাড়ানো আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি জরুরি।
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চলুন আমরা সাহসী হই এবং এমন একটি পৃথিবী গড়ে তুলি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র থাকবে না যে তার স্বপ্ন দেখার সাহস থাকবে না এবং কোনো স্বপ্ন এতটাই বড় হবে না যে তা অর্জন করা অসম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যৎ আমাদের উত্তরাধিকার নয়, এটি আমরা নিজেরা তৈরি করি এবং এই নির্মাণে প্রত্যেকেরই একেকটি করে দায়িত্ব আছে।
সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুযোগ তৈরি—এসব বিষয়কে তাঁর বক্তব্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখেন অধ্যাপক ইউনূস।
উল্লেখ্য, দোহায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’, যার এবারের প্রতিপাদ্য—‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।