নিজস্ব প্রতিবেদক
সোনাগাজী, ফেনী:
ফেনীর সোনাগাজীতে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ীকে গভীর রাতে যৌথবাহিনী গ্রেফতার করেছে। পরিবারের অভিযোগ, এটি পূর্বপরিকল্পিত একটি ষড়যন্ত্র। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মোঃ মিজানুর রহমান (৪০), যিনি স্থানীয়ভাবে ‘মিজান মেম্বার’ হিসেবে পরিচিত।
জানা যায়, রবিবার (২০ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মিজান পাড়া এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে মিজানকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। অভিযানে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ম্যাগাজিন উদ্ধার দেখিয়ে তাকে সোনাগাজী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মিজানের পরিবার দাবি করছে, এটি একটি পরিকল্পিত ফাঁসানোর ঘটনা। তার ছোট ভাই এম ফখরুল ইসলাম জানান, “দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পারিবারিক জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জেরে আমাদের বাড়ির সিসি ক্যামেরার সামনে রাস্তার ওপর অস্ত্র রেখে মিজানকে ফাঁসানো হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের সিসি ক্যামেরা সিস্টেমের DVR মেমোরির একটি অংশ খুলে নিয়ে যায় অভিযানে অংশ নেওয়া বাহিনী।
স্থানীয় বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ওই রাতেই মিজানের চাচাতো ভাই মোঃ আক্তারকেও গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আক্তার বলেন, “আমাকে তুলে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে ছেড়ে দেয়। এটি একটি সাজানো নাটক বলে মনে হয়েছে।”
স্থানীয়দের মতে, মিজান ও তার পরিবার সামাজিকভাবে সক্রিয় এবং এলাকার মানুষজনের পাশে দাঁড়ান সবসময়। তারা অস্ত্রধারী কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
মিজানের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, জাতীয় পার্টির সোনাগাজী উপজেলা কমিটির সভাপতি আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, “মিজান আমাদের কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, তবে তিনি খুব একটা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন না।”
অন্যদিকে সেনাবাহিনীর সোনাগাজী ক্যাম্প ইনচার্জ ক্যাপ্টেন আলিফ আল গণি জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বায়েজীদ খন্দকার বলেন, “সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী যৌথ অভিযানে মিজানের বাড়ি থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা রয়েছে এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যদের দাবি, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন হোক এবং যারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।