সীকর, রাজস্থান:
ভারতের রাজস্থানে এক দলিত তরুণকে যৌন হেনস্থা এবং লোহার রড দিয়ে নৃশংসভাবে মারধরের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সীকর জেলার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, অভিযুক্তরা দলিত পরিচয় জেনে ওই তরুণের গায়ে প্রস্রাবও করে। পুরো ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করা হয়, যা ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ১৯ বছর বয়সি ওই দলিত তরুণ গ্রামের এক বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ঠিক সেই সময় উচ্চবর্ণের দুই ব্যক্তি তার ওপর আচমকা চড়াও হন। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা প্রথমে জাতি নিয়ে কটূক্তি করতে থাকেন, এরপর তরুণকে জোরপূর্বক পোশাক খুলতে বাধ্য করেন এবং যৌন হেনস্থার পর লোহার রড দিয়ে মারধর করেন। পরে তরুণের শরীরে প্রস্রাব করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার ভয়াবহতায় হতভম্ব হয়ে পড়লেও, ভয়ের কারণে ভুক্তভোগী তরুণ প্রথমে থানায় অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি। তবে চলতি সপ্তাহে তিনি সাহস করে সীকরের স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং তফসিলি জাতি ও জনজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের আওতায় মামলা রুজু করে।
এই ঘটনায় রাজ্যের রাজনীতি তেতে উঠেছে। রাজস্থান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস নেতা তিকারাম জুল্লি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “বিজেপি শাসিত রাজস্থানে দলিতদের ওপর অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সীকরের ঘটনা সেই অত্যাচারেরই জ্বলন্ত প্রমাণ।”
তবে শাসকদল বিজেপি দাবি করেছে, সরকার এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। রাজস্থানের বিজেপি মুখপাত্র লক্ষ্মীকান্ত ভরদ্বাজ বলেন, “আমাদের সরকার আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তদন্তে কোনো শৈথিল্য থাকবে না।”
এই মর্মান্তিক ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রাজ্যের মানবাধিকার সংস্থাগুলিও এর সুষ্ঠু বিচার এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।