বিএনপি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে মত দিয়েছে, বিশেষ করে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায়। তারা প্রস্তাব করেছে, সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের পর নতুন একটি ধারা যুক্ত করে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে, যা পরে সংসদে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত হবে। বিএনপি চায়, রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হোন, তবে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ পদ্ধতির বিপক্ষে তারা।
২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতিকে কীভাবে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে ক্ষমতায়িত করা যায়, সে বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। এসব বিষয়ে আইন প্রণয়ন করে সংসদের মাধ্যমে কার্যকর করা যাবে। এতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নিশ্চিত হবে।
বিএনপি আরও প্রস্তাব করেছে, অর্থ বিল, সংবিধান সংশোধনী বিল, আস্থা ভোট ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিল ছাড়া অন্যান্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের ব্যাপারে বিশেষভাবে অর্থ ও আস্থা বিলের ক্ষেত্রে সবার মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন।
এছাড়া, বিএনপি প্রস্তাব করেছে, কেউ পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। তবে দুই মেয়াদ শেষ করে এক মেয়াদ বিরতি দিলে, পরবর্তীতে দল যদি চায় এবং জনগণ ভোট দেয়, তাহলে সেই ব্যক্তি আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। বিএনপি এ ব্যবস্থাকে “নট মোর দেন টু কনজিকিউটিভ টার্ম” বলে উল্লেখ করেছে।
তবে সরকারপ্রধান, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা—এই তিনটি পদ একই ব্যক্তি ধারণ করতে পারবেন না—জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত নয়। সালাহউদ্দিন বলেন, যুক্তরাজ্যসহ অনেক গণতান্ত্রিক দেশে এমনটি প্রচলিত আছে, যেখানে দলীয় প্রধানই সরকারপ্রধান হন। বিএনপির মতে, যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, তাকেই শাসনক্ষমতায় আসার সুযোগ দেওয়া উচিত।