মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, তা স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি করা এসব পণ্য নতুন এই শুল্কের আওতায় পড়বে না। যদিও ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই শুল্ক স্মার্টফোন ও কম্পিউটারসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর যে ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, সেটিও সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল, মেমোরি কার্ডসহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র ও উপাদানের ওপর প্রযোজ্য হবে না। ২ এপ্রিল ট্রাম্প এসব শুল্ক আরোপ করেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ, দেশটির অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিদেশি কারখানায় পণ্য তৈরি করে সেগুলো আমদানি করে, যার বড় একটি অংশ চীনভিত্তিক।
যুক্তরাষ্ট্র অ্যাপলের জন্য একটি বড় বাজার। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ অনুযায়ী, গত বছর অ্যাপলের মোট স্মার্টফোন বিক্রির অর্ধেকের বেশি যুক্তরাষ্ট্রেই হয়েছে। এসব ফোনের প্রায় ৮০ শতাংশ তৈরি হয় চীনে, আর বাকিগুলো ভারতে। অ্যাপল ও স্যামসাং-এর মতো কোম্পানিগুলো চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে তাদের উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। এর ফলে ভারত ও ভিয়েতনাম এখন ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে।
ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর অ্যাপল ভারতের উৎপাদনে মনোযোগ বাড়িয়েছে। যদিও ৯ এপ্রিল থেকে এসব শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, তা চীন ছাড়া অন্য দেশের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। চীনের ক্ষেত্রে শুল্ক হার বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই শুল্ক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নতুন ও লাভজনক বাণিজ্য চুক্তি করতে পারবে বলে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস। ট্রাম্প মনে করেন, বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং নতুন শুল্ক নীতি এই সমস্যার সমাধান করে দেশে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়াবে।