বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সংস্কৃতিকর্মীরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। তরুণ সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান, পুরোনো গান ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’-এর সঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়ে এই আন্দোলনের প্রতি তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেন। তবে আন্দোলনের সমর্থনের কারণে গত জুলাইয়ে তাঁকে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় এবং তাঁর ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে বেধড়কভাবে পেটানো হয়। শান্তর ওপর হামলার এই ঘটনা তাসরিফ তাঁর ফেসবুক পোস্টে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন।
তাসরিফ খান বলেন, তাঁর এই প্রতিবাদ কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ছিল না। তিনি জানান, একজন শিল্পী হিসেবে তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রের অসংগতি নিয়ে কথা বলেছেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবেন। তবে এই প্রতিবাদের কারণে তাঁকে সরকারের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে।
তাসরিফের ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করা হয়, তাঁকে সরকারের পক্ষ থেকে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তাঁকে হুমকি দিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী দেখতে পাবেন। সেই সঙ্গে তাঁকে আর্থিক লোভ দেখিয়ে সরকারের পক্ষে কাজ করতে বলা হয়। এর পরই তাসরিফের ড্রামার শান্তর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যা তাঁকে আরো বেশি চিন্তিত করে তোলে।
তাসরিফ জানান, হামলার পর তিনি বুঝতে পারেন যে, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা ছিল, যা তাঁকে ভীত ও বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তিনি সিদ্ধান্ত নেন বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার, কারণ তাঁকে জোরপূর্বক ভিডিও তৈরি করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
ঘটনার পর তাসরিফ তাঁর ম্যানেজার আয়মান সাবিতকে ফোন করে বিষয়টি জানান এবং বাসা থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ওই এজেন্সিকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং নিরাপত্তার জন্য বাসা ছেড়ে চলে যান। তাসরিফ বলেন, যদিও তিনি দেশের জন্য তেমন কিছু করতে পারেননি, তবে তিনি টাকার কাছে বিক্রি হননি এবং দেশের সঙ্গে বেইমানি করেননি।
এমন পোস্ট দেওয়ার পর তাসরিফকে সেই ইনফ্লুয়েন্সার ফোন করে অনুরোধ করেন, যেন তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশ না করা হয়। তাসরিফও সেই নাম প্রকাশ করতে চান না, কারণ তিনি প্রতিহিংসা চান না। তিনি চান, ওই ইনফ্লুয়েন্সার ভুল বুঝে সংশোধিত হন।