গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় গত ২০ দিনে অন্তত ৪৯০ শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা মিডিয়া অফিস। স্থানীয় সময় রোববার (৬ এপ্রিল) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, এই হত্যাকাণ্ড বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর সুপরিকল্পিত গণহত্যার অংশ।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির সোমবারের (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজা মিডিয়া অফিসের বিবৃতিতে ইসরায়েলের এই বর্বরতাকে ‘আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল গাজায় নিরস্ত্র শিশুদের প্রধান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
গাজা মিডিয়া অফিস বলেছে, “গত ২০ দিনে গাজা উপত্যকায় শিশুদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল এক ধ্বংসাত্মক গণহত্যা চালিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৪৯০ শিশু শাহাদাতবরণ করেছে এবং মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৩৫০ জনে।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, বেসামরিক হতাহতের ঘটনা দুর্ঘটনাবশত ঘটছে। তবে গাজা মিডিয়া অফিস এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, শিশুদের বিপুল মৃত্যুসংখ্যাই প্রমাণ করে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পরিকল্পিতভাবে শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।
এর মধ্যে গত সপ্তাহেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামলা আরও তীব্র করার ঘোষণা দেন। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টাও চলমান, যার উদ্দেশ্য ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত করা।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে, ইসরায়েল বর্তমানে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে)-এর মামলার সম্মুখীন।