ঢাকা, [তারিখ] – চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি চীনা বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে বৃহত্তর বাজার সৃষ্টি করবেন।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা চীনকে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করি। বিগত বছরগুলোতে আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কও আরও দৃঢ় হয়েছে। চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হয়েছে। চীনের সাফল্য দেখে বাংলাদেশের মানুষ অনুপ্রেরণা পায়।”
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস চীনের দারিদ্র্য দূরিকরণ কর্মসূচির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে শুধু জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দেয়, সেখানে চীন নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছে। এ কারণেই দেশটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে দারিদ্র্য হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।”
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে চীন থেকে আমদানি দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে আমাদের শিল্প খাতের কাঁচামাল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী চীন থেকেই আমদানি করা হয়। এতে আমাদের অর্থনীতির বিভিন্ন খাত আরও গতিশীল হচ্ছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশ শুধু একটি দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসেবে গড়ে উঠুক তা নয়, বরং এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি তৈরি করতে চাই যেখানে সবাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই যেখানে সহযোগিতা কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও প্রসারিত হবে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের বন্ধুত্বের ৫০ বছর উদযাপন করেছি এবং আশা করি আগামী ৫০ বছর আরও সফল হবে।”
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের এ নতুন উচ্চতা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।