ঢাকা, ২৫ মার্চ: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “১৯৭১ সালের এই রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরপরাধ, নিরস্ত্র, ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে। ২৫ মার্চ থেকেই এ দেশের মানুষ সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।”
মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লাখো শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত নারীর আত্মত্যাগ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের এই বীরদের প্রতি আমার সালাম।”
তিনি আরও বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যা বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক ভয়াবহ দুঃসহ স্মৃতি হয়ে থাকবে। সেই রাতের নির্মম হত্যাযজ্ঞের পর থেকেই এ দেশের মানুষ দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
একইসঙ্গে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত হাজারো শহীদ ও আহতদের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “তারা বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে, সেই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে চাই।”
ভাষণে তিনি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। তাহলেই আমরা একটি উন্নত, শান্তিপূর্ণ এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “২৫ মার্চের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এই হত্যাযজ্ঞ মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক ভয়াবহতম ঘটনা, যা কখনোই ভুলে যাওয়ার নয়।”