ঢাকা, ২৫ মার্চ: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে যারা সহযোগিতা করেছিল, তারাই এখন গলা ফুলিয়ে কথা বলছে। আওয়ামী লীগ নেতারা সেসময় দেশবাসীকে অরক্ষিত রেখে পালিয়ে গিয়েছিল, আজও সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।”
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, “পাকিস্তান এখনো ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চায়নি। অথচ যারা তখন হত্যাযজ্ঞের সহযোগী ছিল, তারা আজ ইতিহাস বিকৃত করছে।”
তিনি আরও বলেন, “রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামী লীগ নেতারা দিকনির্দেশনা না দিয়েই পালিয়ে গিয়েছিলেন। অথচ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।”
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক চর্চার সুযোগ না দিয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। এখন যখন জনগণের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে, তখন তারা আবারও পালিয়ে গেছে। আগস্টের দিকে তাদের অনেক নেতা হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালিয়েছে।”
আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “অনেকেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদানকে অস্বীকার করার চেষ্টা করেন। অথচ তিনিই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত নায়ক। তার নেতৃত্বেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ছাড়া, দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।”
বর্তমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব বিএনপিই প্রথম নিয়ে আসে। শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ধরে দেশে প্রথম সংস্কার শুরু হয়। এরপর মৌলিক সংস্কারের নেতৃত্ব দেন খালেদা জিয়া। এবার বিএনপি ৩১ দফার সংস্কার পরিকল্পনা দিয়েছে, যা দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচার ছড়িয়ে দেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত হতে দেব না।”
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু নির্বাচনকে বানচাল করতে নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জনগণের অধিকার রক্ষায় বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে।”