ঢাকা, ২৫ মার্চ: দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে এক ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস ২৫ মার্চের ভয়াল রাতের কথা স্মরণ করে বলেন, “২৫ মার্চ মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন। এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পথকে সুসংহত করা।
চলতি বছর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি। এদের মধ্যে ৬ জন মরণোত্তর পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন:
✅ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর)
✅ সাহিত্য: মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর)
✅ সংস্কৃতি: নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর)
✅ সমাজসেবা: স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর)
✅ মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতি: মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর)
✅ শিক্ষা ও গবেষণা: বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর
✅ প্রতিবাদী তারুণ্য: আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)
অধ্যাপক ইউনূস জানান, পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে বদরুদ্দীন উমর পুরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাই তার পদকটি জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সময় তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেন মরণোত্তর পুরস্কার প্রদানের পরিবর্তে জীবিত অবস্থায়ই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সম্মাননা পান, সে বিষয়ে সরকার নজর দেবে।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানুষের ভোটাধিকার অক্ষুণ্ন থাকবে। এই সুযোগ আমাদের হারানো উচিত নয়।”
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।