সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তরুণদের জন্য নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান
নতুন বাংলাদেশ গড়তে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তরুণদের অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। তারা বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে এই শিশু ও তরুণদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে এক ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানে নেতারা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির নেতা মাহবুব।
মাহবুব বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তরুণদের গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা দেখেছি, জুলাই আন্দোলনে এই তরুণরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। তাদের আত্মত্যাগের ভিত্তিতেই আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই তাদের প্রতি কোনো জুলুম ও অন্যায় সহ্য করা হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এই দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়। আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে, তাহলেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।”
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উদ্দেশে মাহবুব বলেন, “কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি তোমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সঠিক শিক্ষা ও সুযোগ-সুবিধা না দেয়, তাহলে আমরা তা নিয়ে কাজ করব। কারণ তোমাদের জন্যই আমাদের সংগঠন। তোমাদের সহায়তা ছাড়া আমরা এইভাবে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের আশ্বাস শুধু কথায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। তোমাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন তাওহীদ ইসলাম। তিনি বলেন, “কড়াইল বস্তি ও আশপাশের এলাকায় মাদক, কিশোর গ্যাং, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি অন্যতম সমস্যা। এগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কিছু নেতারা জড়িত। তারা নিজেদের স্বার্থের জন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুরবস্থার সুযোগ নেয়।”
তিনি আরও বলেন, “নতুন বাংলাদেশে এমন বৈষম্যের কোনো স্থান থাকবে না। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আলী, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী কামরুল শাহাদাত, শিহাবসহ আরও অনেকে।
নেতারা বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তোমাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের কাজগুলো যেন কেবল কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে একটি সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্র উপহার দেওয়া সম্ভব।”
নতুন বাংলাদেশ গঠনে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তরুণদের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। তাদের উন্নয়নে শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার ও সমাজ থেকে বৈষম্য দূর করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ একত্রে কাজ করলে সত্যিকারের পরিবর্তন আনা সম্ভব।