একদিনে পাঁচ ধর্ষণের অভিযোগ, নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন
ঢাকায় একদিনে ধর্ষণের শিকার শিশু-কিশোরীসহ পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হলেও জনমনে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে এই পাঁচজনকে ঢামেকের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে দুই শিশু ও এক কিশোরী মুগদা থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে। এছাড়া, হাতিরঝিল এলাকা থেকে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী এবং আরেকজন কিশোরীকেও হাসপাতালে আনা হয়।
মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-আমীন জানান, বুধবার ইফতারের পর এক ১২ বছর বয়সী কিশোরীকে তার প্রতিবেশী জব্বার (৪০) ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। কিশোরীর পরিবার বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং ভুক্তভোগীকে ওসিসিতে ভর্তি করে।
এছাড়া, ১৮ মার্চ মুগদা থানার একই এলাকায় আরেকটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় পিন্টু চন্দ্র দাস নামের এক প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিশুর শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকেও ওসিসিতে পাঠানো হয়।
মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তহিদুল ইসলাম জানান, ১৮ মার্চ এক ১৫ বছর বয়সী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্ত সিয়াম (১৮) পূর্বপরিচিত ছিল বলে জানা গেছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ভুক্তভোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
হাতিরঝিল থানার এক তরুণীও ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। তাকে ঢামেক ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তার ঘটনার বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
এই ঘটনাগুলো সামনে আসার পর পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ধর্ষণের মতো অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে আরও কঠোর আইন প্রয়োগ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্ষণ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবারের অভ্যন্তরীণ শিক্ষার গুরুত্ব দেওয়া এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
একদিনে পাঁচজন ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রশাসন অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করলেও সমাজে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।