প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা এবং কার্যক্রম
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশের প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়ে এখন থেকেই উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার (১৯ মার্চ) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। (সূত্র: বাসস)
সভায় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন প্রস্তুতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশ দেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো:
- ঝুঁকি ভাতার সীমা প্রত্যাহার: বর্তমানে প্রচলিত ঝুঁকি ভাতার সিলিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। এর ফলে পুলিশের সার্বিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত হবে।
- নতুন যানবাহন সংগ্রহ: পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন ৩৬৪টি পিকআপ এবং ১৪০টি প্রিজনার ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- অর্থ ছাড়ের নির্দেশ: পুলিশের চলমান নির্মাণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে যেগুলোর কাজ ৭০ শতাংশের নিচে সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর জন্য দ্রুত অর্থ ছাড় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- ভাড়া করা থানার জন্য জমি অধিগ্রহণ: বর্তমানে ভাড়া করা ভবনে অবস্থিত ৬৫টি থানার জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে করে থানাগুলোর স্থায়ী কাঠামো নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
- সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা: পুলিশের এসআই ও এএসআই র্যাংকের সদস্যদের জন্য মোটরসাইকেল কেনার সুবিধার্থে সুদমুক্ত ঋণ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, কর্ম সম্পাদনের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ বাহিনীকে শ্রেণিভুক্ত করতে হবে। যারা পারফরম্যান্সে পিছিয়ে থাকবে, তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ উদ্যোগ পুলিশের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে এবং তাদের সেবা আরও উন্নত হবে।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সভায় কর্মকর্তারা তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরেন। এসব সমস্যা সমাধানে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আগামী নির্বাচনে পুলিশের দায়িত্ব ও প্রস্তুতি সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো:
- নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা
- সহিংসতা প্রতিরোধে নজরদারি বৃদ্ধি
- প্রয়োজনে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন
- জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর থাকা
আগামী নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পুলিশের প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় পুলিশের জন্য গৃহীত নতুন উদ্যোগ ও কল্যাণমূলক পদক্ষেপগুলো বাহিনীর কর্মদক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা দেশ ও জনগণের স্বার্থেই অপরিহার্য।