হাইকোর্টের আদেশ: দুই দফায় জামিন পেলেন ৪২ আসামি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক আইনের চার মামলায় মোট ৪২ জন আসামিকে দুই দফায় আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১৬ মার্চ) ৩৬ জন এবং সোমবার (১৭ মার্চ) আরও ৬ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। জামিনপ্রাপ্তদের সবাই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান এবং মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এই জামিন আদেশ দেন। আদালত আসামিদের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন এবং মামলার পরবর্তী কার্যক্রম যথানিয়মে পরিচালনার নির্দেশ দেন।
সোমবার জামিন পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন:
- সুলতান আহমদ – পিতা: মতিউর রহমান, গ্রাম: মানিকপুর, জকিগঞ্জ
- সজল কুমার সিংহ – পিতা: সুধীর কুমার সিংহ, গ্রাম: কলাদাপানিয়া, জকিগঞ্জ
- ইকবাল আহমদ – পিতা: মো. আব্দুর রহিম, গ্রাম: হাতধর, জকিগঞ্জ
- এটিএম ফয়সল – পিতা: আব্দুল করিম, গ্রাম: দরগা বাহারপুর, জকিগঞ্জ
- শিমুল আহমদ – পিতা: নোমান আলী, গ্রাম: পীরের চক, জকিগঞ্জ
এর আগে রোববার যেসব ব্যক্তি জামিন পান, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন:
- আবুল খায়ের চৌধুরী – জকিগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি
- আফতাব আহমদ – জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
- এম এ জি বাবর – জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
- আব্দুস সালাম – জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
- সজল বর্মণ – জকিগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি
- আল আমিন আব্দুল্লাহ সুমন – জকিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক আইনে চারটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা প্রদান, সহিংসতা সৃষ্টি এবং বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। আসামিরা আগাম জামিনের আবেদন করলে হাইকোর্ট তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত বলেন, “প্রত্যেক নাগরিকের আইনগত অধিকার রয়েছে, তবে এই অধিকার কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে না।” বিচারক আরও জানান, মামলার পরবর্তী শুনানিতে তদন্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে এবং উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে অন্যতম জকিগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, এই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে, ন্যায়বিচার পাবো বলে আশা করছি।”
এদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, তারা জামিনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিস্ফোরক আইনের মামলায় আসামিদের জামিনপ্রাপ্তি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভবিষ্যতে এর পরবর্তী কার্যক্রম কেমন হয়, সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সাধারণ জনগণ।