নিজস্ব প্রতিবেদক
রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল ভূমিকা রাখায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের প্রশংসা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। সোমবার (১৭ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এ প্রশংসা করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, “২০২৪ সালের ২ জুলাই সংসদে আওয়ামী লীগের এক সাংসদ বলেছিলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই। অথচ মাত্র সাত মাসের মাথায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন সিন্ডিকেট ভেঙেছেন, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে এনেছেন এবং রমজানে জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছেন।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “একটি চক্র রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত ছিল, যাতে বাজার অস্থির হলে তারা সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রচার চালাতে পারে। কিন্তু বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যকরী উদ্যোগ সেই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, এবং তিনি তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করছেন।”
বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে হাসনাত বলেন, “দেশে পেঁয়াজ ও আলুর মূল্য কমাতে বশির সাহেব শুল্ক হ্রাস করেছেন। আলুর শুল্কহার ৩৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, পেঁয়াজের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এই দুই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেছে।”
তিনি আরও জানান, “পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেলের ওপর থেকে ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় বাজারে তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করেছে। একইসঙ্গে, ডিমের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে, যাতে এই পণ্যটির দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “বাজার পরিস্থিতি মনিটর করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জেলা পর্যায়ে ১০ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এছাড়া, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশজুড়ে ৩,৩৫৩টি বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে ৬,৫৭৩টি প্রতিষ্ঠানকে দণ্ডিত করা হয় এবং প্রায় ৩.৯৫ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।”
শুধু দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণই নয়, দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে চান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, “বশির সাহেব কাস্টমস ডিউটি ও শুল্ক কাঠামো ঢেলে সাজাতে চান, বিনিয়োগ সহজ করতে চান এবং আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য আনতে চান।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পাকিস্তান ও তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। বিশেষ করে, পর্যটন, এভিয়েশন এবং শিপিং খাতে তুরস্কের বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে কাজ করছেন তিনি।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টের শেষে প্রশংসার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ইন্টেরিম সরকারের অন্যতম সেরা নিয়োগ ছিল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। আমরা চাই, কাজের স্বীকৃতি দিতে শিখি। বশির সাহেব আজ সফল হচ্ছেন, তাই তার প্রশংসা করছি। যদি কোনো ভুল করেন, তখন সমালোচনাও করব।”
সবশেষে তিনি বাণিজ্য উপদেষ্টার প্রতি শুভকামনা জানিয়ে লেখেন, “বশির সাহেব, আপনি আমাদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে তুলেছেন। ইন্টেরিম সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এমন কিছু দৃষ্টান্ত রেখে যান, যা ভবিষ্যতে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।”