ঢাকা, ১৬ মার্চ: বহুল আলোচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের রায় পড়া শুরু হয়েছে।
রোববার (১৬ মার্চ) সকাল ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা শুরু করে। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রায় পাঠ করে শোনাচ্ছেন।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার বিচারিক আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে, মামলার ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে পাঠানো হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জেল আপিল এবং নিয়মিত আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট এসব আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে। এরপর ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও নিয়মিত আপিলের একসঙ্গে শুনানি হয়।
২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ মামলার পেপারবুক উপস্থাপনের মাধ্যমে শুনানি শুরু করে। এরপর ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় শুনানি শুরু হয়, যা প্রায় প্রতিদিন চলেছে। সর্বশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ হলে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরে, হলের একটি কক্ষে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাত ৩টার দিকে হলের সিঁড়ির করিডোর থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। বিষয়টি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করে কারা কর্তৃপক্ষ।
আবরার হত্যার বিচার নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা ও আন্দোলন হয়। পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার দাবি করে আসছে। হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।