বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা উন্নত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান
বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, দেশের প্রতিটি মা, বোন ও কন্যার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আট বছর বয়সী এক শিশুর ধর্ষণের পর মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের সবাইকে দুঃখ, লজ্জা ও শোকার্ত করেছে। দেশের শিশু ও নারীদের কখনোই সহিংসতা, নিপীড়ন ও হয়রানির মুখোমুখি হওয়া উচিত না।”
তিনি আরও বলেন, “জাতি হিসেবে আমাদের নিজেদের দিকে তাকানো দরকার যেন দেশে এ ধরনের অন্যায় না হয়, তা নিশ্চিত করা যায়। একটি সমাজ গঠনের জন্য আমাদের স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে হলে, সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।”
নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “আমি ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমাদের দল বিএনপি ইতোমধ্যে দুটি বিশেষ সেল গঠন করেছে, যার একটি চিকিৎসা সহায়তার জন্য এবং অপরটি আইনি সহায়তার জন্য।”
তিনি উল্লেখ করেন, “এই সেলগুলোতে বেশ কয়েকজন নারী চিকিৎসক ও আইনজীবী রয়েছেন, যারা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারকে বিনামূল্যে, পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবেন।”
নারীর ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নারীর অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছে। তারেক রহমান পোস্টে বলেন, “আমরা আবারও দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত এবং লিঙ্গ, ধর্ম বা রাজনৈতিক মতামত নির্বিশেষে সবার জন্য নিরাপদ, সমান ও ন্যায়বিচারপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলা ব্যাপক হারে বেড়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর আইন ও তার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের কঠোর প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হলে এই অপরাধের হার কমানো সম্ভব। তবে তারেক রহমানের আহ্বান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার নারীর নিরাপত্তার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবে, তা এখন দেখার বিষয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলেছেন, অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, অপরাধ দমনের জন্য কেবল আইন প্রয়োগ করাই যথেষ্ট নয়; সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা তৈরি করাও জরুরি।
নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেবল রাজনৈতিক বক্তব্যই যথেষ্ট নয়; দরকার বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। তারেক রহমানের এই আহ্বান কি সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করবে, নাকি এটি রাজনৈতিক আলাপচারিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে? তা সময়ই বলে দেবে। তবে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকর ভূমিকা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।