ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক সিস্টেমে অটোমেশন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে এয়ার ফিল্ড পরিচালনা হবে আরও সহজ ও গতিশীল, কমবে উড়োজাহাজ ওঠানামার সময়। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মে মাসের মধ্যেই এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে বিমানবন্দরের কার্যক্রমে গতি আসবে এবং সেবা হবে আরও নির্ভরযোগ্য।
শাহজালাল বিমানবন্দর প্রায় পাঁচ দশক ধরে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় এবং একক এয়ারফিল্ডের কারণে কার্যক্রম পরিচালনায় নানা সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কারণে প্রায়ই ফ্লাইট রিশিডিউল করতে হয়।
বর্তমানে বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এনালগ পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। অ্যাপ্রোন, পার্কিং ও ফ্লাইট মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ এখনো ব্যক্তি নির্ভর। এতে কার্যক্রমে ধীরগতি তৈরি হয়। তবে নতুন অটোমেশন ব্যবস্থায় এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা যাবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, “নতুন স্মার্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সংখ্যক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এপ্রিলে পরীক্ষামূলকভাবে এবং মে মাস থেকে পূর্ণমাত্রায় অপারেশন চালু হবে। এতে উড়োজাহাজের অবতরণ, উড্ডয়ন ও পার্কিং পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় হবে, যা বিমানবন্দরের পরিচালনাকে সহজ করবে।”
এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (ATM) সাধারণত ট্রাফিক সার্ভিস, এয়ারস্পেস ম্যানেজমেন্ট, ট্রাফিক কন্ট্রোল, ফ্লাইট ইনফরমেশন ও এলার্টিং সার্ভিসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এনালগ পদ্ধতিতে এসব উইং সমন্বয় করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন অটোমেশন চালু হলে প্রতিদিনের ফ্লাইট পরিচালনা সহজ হবে এবং উড়োজাহাজ ওঠানামার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
ইউনাইটেড কলেজ অব অটোমেশনের উপদেষ্টা এ. টি. এম. নজরুল ইসলাম বলেন, “বিমানবন্দরে অটোমেশন হলে কার্যকারিতা বাড়বে এবং সময়ক্ষেপণ কমবে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।”
তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, নতুন ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, সঠিকভাবে ফ্লাইট তথ্য এন্ট্রি এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে যাবে।