ঢাকা: রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভুঁইয়া হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আশ্রিত নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পেছনে থাকা দম্পতি—নাজিম হোসেন (২১) ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)—কে ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে পরিচয়ের সূত্র ধরে মানবিকতার কারণে সাইফুর রহমান তাদের বাসায় আশ্রয় দেন। কিন্তু পরে তিনি রুপাকে একাধিকবার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠে।
পুলিশ জানায়, গত ৯ মার্চ রাতে সাইফুর রহমান রুপাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার স্বামী নাজিম প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নাজিম ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো বঁটি দিয়ে সাইফুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে যান। পরে তাকে বাথরুমে আটকে রেখে দম্পতি পালিয়ে যান।
সোমবার (১০ মার্চ) সকালে রাজধানীর উত্তরখান থানার পুরানপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভুঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বঁটি, একটি চাকু, রক্তমাখা জামাকাপড় ও বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মহিদুল ইসলাম জানান, “এটি একটি হত্যাকাণ্ডের মামলা। অভিযুক্তরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় মামলাটি কীভাবে এগোবে, তা আদালত পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তিনি আরও জানান, নিহত সাইফুর রহমান তার স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনায় উত্তরখানে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। তবে তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনো পারিবারিক বিরোধ ছিল কি না, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে।