ঢাকা: দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষার্থীর চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আপিল নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন।
এর আগে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন।
রায়ের পর আপিলকারীদের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের জানান, এ রায়ের ফলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনের মধ্যে যারা যোগদান করতে চাইবেন, তারা ২৭তম ব্যাচে ধারণাগত জ্যেষ্ঠতাসহ নিয়োগ পাবেন।
কতদিনের মধ্যে তাদের নিয়োগ দিতে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হাইকোর্টের রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সুতরাং সেই ৯০ দিন বহাল রাখা হয়েছে।”
বিতর্কিত মৌখিক পরীক্ষা ও আইনি লড়াই
উল্লেখ্য, ২৭তম বিসিএস-এর প্রথম মৌখিক পরীক্ষা ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বাতিল করে দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষে মনির হোসেনসহ কয়েকজন হাইকোর্টে রিট করেন।
সে রিটের শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্ট প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের পিএসসির সিদ্ধান্তকে বৈধ ঘোষণা করেন। এরপর দ্বিতীয়বারের মতো মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এই পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের পক্ষে মো. সোহেল রানাসহ কয়েকজন পরীক্ষার্থী ২০০৮ সালে হাইকোর্টে আরেকটি রিট করেন। বিচারপতি মিফতাহ্ উদ্দিন চৌধুরী রুমী ও বিচারপতি এবি সিদ্দিকীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বরের রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের সেই রায়ে প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তিন মাসের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে, দ্বিতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরিতে নিযুক্তদের বহাল রাখার আদেশ দেন আদালত।
তবে সরকারের করা তিনটি আপিলের শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১১ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. ফজলুল করিমের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ রায় দেন। সে রায়ে প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখার পাশাপাশি, দ্বিতীয় পরীক্ষাকে অবৈধ ঘোষণা করার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।
দীর্ঘ এ আইনি প্রক্রিয়ার পর অবশেষে ১৭ বছর পর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিতদের চাকরিতে ফেরানোর আদেশ এল।