ঢাকা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কুয়েটের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাবিতে আলাদা আলাদা বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
সন্ধ্যা ৮টায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর ঘুরে এসে আবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। অন্যদিকে, একই সময়ে ঢাবি ছাত্রদল রাজু ভাস্কর্যের কাছাকাছি ডাস ক্যাফেটেরিয়া এলাকায় তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। সংঘর্ষের পর সন্ধ্যায় ঢাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়।
অন্যদিকে, ছাত্রদল দাবি করেছে, কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে অপব্যবহার করে ফরম বিতরণের অভিযোগ তোলায় তাদের নেতাকর্মীদের ওপর ‘গুপ্ত সংগঠন’ শিবির ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাবি ছাত্রদলও সমাবেশের আয়োজন করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,
“বাংলাদেশে যারা ছাত্রলীগের মতো শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করবে, তাদের পরিণতিও ছাত্রলীগের মতোই হবে। ছাত্র রাজনীতি করতে হলে শিক্ষার্থীদের ভাষা বুঝে রাজনীতি করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, আগামীকাল (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় টিএসসিতে আওয়ামী লীগের নির্যাতনের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হবে।
অন্যদিকে, ছাত্রদলের সমাবেশে নেতারা বলেন,
“কুয়েটের ঘটনায় ছাত্রদলকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমাদের সংগঠন সুশৃঙ্খল। দেশে চলমান অসুস্থ রাজনীতিকে প্রতিহত করবে ছাত্রদল।”
কুয়েট শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রদলের অনুসারীরাই এই সংঘর্ষে জড়িত। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও এটি ফেরানোর ‘চক্রান্ত’ চলছে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তবে ছাত্রদল এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ফরম বিতরণের প্রতিবাদ করায় শিবির ও ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
কুয়েট ও ঢাবির এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।