ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশের অনন্য ভৌগোলিক অবস্থান দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এই সুবিধা সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে, দেশের অর্থনীতিকে কেউ শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এসব অঞ্চলের মালামাল বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পরিবহন করলে দেশ লাভবান হবে। ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং এর পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
দেশের উন্নয়নের প্রধান বাধা হিসেবে দুর্নীতিকে চিহ্নিত করে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি, যা দেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে দুর্নীতি মুক্ত হতে হবে।” এ জন্য প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তথ্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
এছাড়া প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য জেলার পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে র্যাংকিং প্রকাশ এবং এগিয়ে থাকা জেলাকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জুলাই বিপ্লবে তরুণদের অসাধারণ ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের তরুণরা যা দেখিয়েছে, তা বিশ্বে বিরল। তাদের জন্য দরজা খুলে দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে পারে।”
দেশে নার্স সংকটের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা কথায় কথায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করছি, কিন্তু তার সঙ্গে একটি করে নার্সিং কলেজ যুক্ত করলে অনেক দক্ষ নার্স তৈরি করা সম্ভব হবে। বিশ্বে নার্সের চাহিদা কখনোই শেষ হবে না, তাই এই খাতে বিনিয়োগ জরুরি।”
প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, বাংলাদেশকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে নীতিগত সংস্কার প্রয়োজন। দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন, আঞ্চলিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।