ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি: পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার, এটি কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশনের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “পাসপোর্ট আমার নাগরিক অধিকারের অংশ। আমি চোর না ডাকাত, সেটা পুলিশ আলাদাভাবে বিচার করবে। জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিতে তো কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগে না, পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও তা অপ্রয়োজনীয়।”
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস প্রশাসনিক জটিলতা কমানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা আইন করে দিয়েছি, কিন্তু তা গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছায়নি। অথচ আমরা এখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছি। এই দূরত্ব থাকা উচিত নয়। মানুষকে অহেতুক হয়রানি করা যেন আমাদের ধর্ম হয়ে গেছে। সরকার মানেই মানুষকে হয়রানি করা নয়, বরং জনগণের অধিকার নিশ্চিত করাই সরকারের মূল দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রশাসনিক সংস্কৃতি বদলাতে হবে। জনগণের সুবিধা নিশ্চিত করাই হবে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধান কাজ।”
এর আগে, ১৫ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ জানান, ২০২৪ সালের ডিসি সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের হার কমে গেছে।
তিনি বলেন, “গত বছর ডিসি সম্মেলনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি মোট ৩৮১টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, যার মধ্যে মাত্র ৪৬ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে, ২০৪টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, এবারের ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মোট ৩০টি কার্য-অধিবেশন এবং ৪টি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
বিশেষ অধিবেশনগুলো হলো:
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা
এবারের সম্মেলনে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে মোট ৩৫৪টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
ডিসি সম্মেলনের অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা এবং রাতে নৈশভোজের আয়োজন থাকবে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনিক কাজে গতিশীলতা আনতে এবং জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা আরও কার্যকর করতে নতুন পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।