ঢাকা: গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ ১০টি দেশে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর নেতৃত্বে গঠিত জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স ইতোমধ্যে পাচারকৃত অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, অর্থপাচার ঠেকাতে এবং ফেরত আনতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট ১০টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “যেসব দেশে অর্থপাচার হয়েছে, তারা আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। তবে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহায়তার ওপর নির্ভর করছে।”
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূলত আমদানি-রপ্তানির আড়ালে এই বিশাল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যে, এস আলম, সামিট, ওরিয়নসহ ১০টি বড় প্রতিষ্ঠান অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত।
অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারের কিছু অসাধু ব্যক্তির সহযোগিতার কারণেই এই বিশাল অর্থপাচার সম্ভব হয়েছে। তবে বর্তমান প্রশাসন পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূলত আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারতসহ ১০টি দেশে সর্বাধিক অর্থপাচার হয়েছে। পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে দুদকের পাশাপাশি সিআইডি, বিএফআইইউ ও কাস্টমস কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থ ফেরানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, আন্তর্জাতিক আইনগত পদক্ষেপ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
দুদকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কিছু চুক্তি ও সহযোগিতার বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি সফলভাবে এই অর্থ ফেরানো যায়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সাধারণ জনগণের ওপর করের বোঝাও কমবে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রমাণ দিতে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে অর্থ ফেরানো ও দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও কঠোর আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
—
১৫ বছরে অর্থপাচার: ২৮ লাখ কোটি টাকা
প্রধান পাচারকারী দেশ: আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারতসহ ১০টি দেশ
মূল পাচারের পদ্ধতি: আমদানি-রপ্তানির আড়ালে
অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ: দুদক, সিআইডি, বিএফআইইউ ও কাস্টমসের যৌথ কার্যক্রম
সরকারের লক্ষ্য: পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা