ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর চাকরিচ্যুত হওয়া বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সাবেক সদস্যরা চাকরিতে পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তারা এই কর্মসূচি শুরু করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাবেক বিডিআর সদস্যরা দাবি করছেন, ২০০৯ সালে পিলখানা ট্র্যাজেডির পর কোনো সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি এবং তাদের বিনা বিচারে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদের দাবি, তারা নির্দোষ এবং ষড়যন্ত্রের শিকার।
এদিকে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ এক মেজরের স্ত্রী নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের ঠিক আগে তার স্বামীর সঙ্গে শেষ কথোপকথনে তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শুনেছিলেন, যা এতদিন তিনি প্রকাশ করেননি।
নিহত মেজরের স্ত্রী বলেন,
“আমার স্বামী সর্বশেষ ফোনে আমাকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন। প্রথমত, তিনি বলেছিলেন, দরবার হলে বিডিআরের পোশাক পরা কিছু ‘লীগ নেতা’ উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয়ত, তিনি এমন কিছু বিডিআর সদস্যকে দেখেছেন, যাদের বয়স তুলনামূলকভাবে বেশি, অর্থাৎ তারা সাধারণ বিডিআর জওয়ানদের চেয়ে বয়স্ক। তৃতীয়ত, তিনি বারবার ‘এনএসডি’ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন, যা আমি তখন বুঝতে পারিনি। পরে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়ানস’। কিন্তু কথা শেষ হওয়ার আগেই তাকে গলা টিপে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন,
“যে লোকগুলো আমাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যায়, তারা বাইরে গিয়ে হিন্দিতে কথা বলছিল। এটি স্পষ্ট, ওই ঘটনার পেছনে বহিরাগত শক্তির হাত ছিল।”
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করতে নিরপেক্ষ তদন্ত এবং পুনর্বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সচেতন নাগরিকরা। তাদের মতে, দীর্ঘ ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি।
অন্যদিকে, চাকরি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনরত সাবেক বিডিআর সদস্যরা বলছেন, তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান এবং ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, বিশ্লেষকদের মতে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের দাবির বিষয়টি নতুন করে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।