ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি: সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা চারটি আবেদনের শুনানি দুই সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু করা হয়। তবে এ ব্যবস্থার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এরপর ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট এই রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।
তবে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেওয়া হলে ২০০৫ সালে আবেদনকারীরা আপিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন। এই রায়ের ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়, যা কার্যত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করে।
সরকার পরিবর্তনের পর, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের লক্ষ্যে রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। এরা হলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, আইনজীবী জোবাইরুল হক ভূঁইয়া, গবেষক জাহরা রহমান ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক তোফায়েল আহমেদ।
এছাড়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। একইভাবে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন দাখিল করেন। এ ছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একটি আবেদন করেন।
আজকের শুনানিতে আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা রিভিউ শুনানি দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তবে আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানি দুই সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেন।