ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি: আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশ আরও পিছিয়েছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এবার রয়েছে ১৪তম অবস্থানে, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল।
টিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের দুর্নীতি সূচক (Corruption Perceptions Index – CPI) স্কোর ২৩, যা ২০২৩ সালের তুলনায় এক পয়েন্ট কম। এই স্কোরে কঙ্গো এবং ইরানও বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০তম, যেখানে স্কোর ছিল ২৪।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের এবং পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
নতুন এই প্রতিবেদন বাংলাদেশে দুর্নীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা, সরকারি কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দুর্নীতির উচ্চ হার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। টিআইবি এই প্রবণতা রোধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, অথচ বাংলাদেশে দুর্নীতির বিস্তার কমার পরিবর্তে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের নীতি কঠোর না হলে দুর্নীতির সূচকে আরও নিচে নামার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান আরও খারাপ হওয়া সুশাসনের ঘাটতি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগের অভাবকে স্পষ্ট করছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করাই হবে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের অন্যতম পথ।