শক্ত হাতে মবের মহড়া দমনের ঘোষণা
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটি কড়া বার্তা দিয়েছেন, যেখানে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, অভ্যুত্থানের পক্ষে মব কার্যক্রম হলে সংশ্লিষ্টদের ডেভিল হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সোমবার রাতে তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ বার্তা দেন। এই বক্তব্যে তিনি রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও আইন হাতে তুলে নেওয়ার বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “অভ্যুত্থানের পক্ষে হলে মব করা বন্ধ করুন। আর যদি মব করেন, তাহলে আপনাদেরও ডেভিল হিসাবে ট্রিট করা হবে।” তাঁর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, রাষ্ট্র অস্থিতিশীল করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে সরকার শক্ত হাতে দমন করবে।
তিনি আরও বলেন, “আজকের ঘটনার পর আর কোনো অনুরোধ করা হবে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া আপনাদের কাজ নয়।” এ সময় তিনি কথিত আন্দোলন এবং মবের মহড়া শক্ত হাতে মোকাবিলা করার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রকে অকার্যকর এবং ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করলে এক বিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি সতর্ক করেন।
মাহফুজ আলম তৌহিদী জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা দেড় দশক পরে শান্তিতে ধর্ম ও সংস্কৃতি পালনের সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের আহমকি কিংবা উগ্রতা আপনাদের সেই শান্তি বিনষ্টের কারণ হতে যাচ্ছে।” তিনি সবাইকে জুলুম করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, “জুলুম করবেন না, জুলুমের শিকারও হবেন না। এটাই আপনাদের কাছে শেষ অনুরোধ।”
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার যেকোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার মব কার্যক্রম ও অরাজকতা কোনোভাবেই সহ্য করবে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম চালালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
“যে কোনো মবের মহড়া শক্ত হাতে দমন করা হবে। রাষ্ট্রকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করলে এক বিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।” —এই ভাষ্য থেকে বোঝা যায় যে, সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
মাহফুজ আলম বলেন, অতীতে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার বহু উদাহরণ রয়েছে। তিনি সবাইকে এসব ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান। “আজকের ঘটনার পর আর কোনো অনুরোধ করা হবে না,” বলে তিনি সতর্ক করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উপদেষ্টার এই বক্তব্য মূলত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। তবে জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি কিংবা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সহজেই বড় ধরনের সমস্যার জন্ম দিতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত জনসচেতনতা কার্যক্রম চালানো এবং শান্তি বজায় রাখতে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
- সতর্কতামূলক ব্যবস্থা: প্রতিটি জনসমাবেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি: শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালানো।
- তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার: মব কার্যক্রম মনিটরিং করতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা।
- সুশাসন নিশ্চিত করা: প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এই কড়া বার্তা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি মব কার্যক্রম ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম বন্ধ করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। সরকারের এই পদক্ষেপ রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তবে একই সঙ্গে জনগণের সঙ্গে সমন্বয় রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বিপদ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সবার সহযোগিতায় দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।