ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি:
অমর একুশে বইমেলায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় দর্শনার্থীদের রোষানলে পড়েছেন লেখক শতাব্দী ভব। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ তাকে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে নেয় এবং তার প্রকাশনা সংস্থা সব্যসাচী স্টলটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সব্যসাচী স্টলে তসলিমা নাসরিনের একটি বই বিক্রি নিয়ে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। একদল শিক্ষার্থী বইটি বিক্রি হচ্ছে দেখে আপত্তি জানায় এবং এর কারণ জানতে চায়। এ সময় উপস্থিত শতাব্দী ভব তাদের “জঙ্গি” বলে মন্তব্য করেন এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এতে দর্শনার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন, যেমন—
“আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”
“সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”
“স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান”
লেখকের বিরুদ্ধে উত্তেজনা, পুলিশের হস্তক্ষেপ
একপর্যায়ে উত্তেজিত দর্শনার্থীরা শতাব্দী ভবকে ঘিরে ধরে এবং তাকে মারধরের চেষ্টা করে। পুলিশ দ্রুত সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে বিক্ষুব্ধ জনতা “ধর ধর, মার তাকে” বলে চিৎকার করতে থাকে।
অবশেষে, পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ লেখককে সরিয়ে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, উত্তেজিত দর্শনার্থীদের চাপের মুখে শতাব্দী ভব দুই হাত জোড় করে ক্ষমা চান।
রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “লেখক শতাব্দী ভবকে আমরা জিম্মায় নিয়েছি। তার প্রকাশনায় যদি কোনো নিষিদ্ধ বই পাওয়া যায়, তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তার স্টল বন্ধ থাকবে।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলার সব্যসাচী স্টলটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বইমেলার পরিবেশ কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। লেখক শতাব্দী ভবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তা পুলিশি তদন্তের ওপর নির্ভর করবে।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বইমেলা কর্তৃপক্ষ কঠোর নজরদারির আশ্বাস দিয়েছে।