ঢাকা ও নয়াদিল্লি: ভারতের মাটিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারের পর বাংলাদেশে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক সরকারের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ভারতের পার্লামেন্টেও শেখ হাসিনার ইস্যুটি উত্থাপিত হয়েছে, যেখানে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভারতের সংসদে কেরালার সাংসদ জন বিট্টাস তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন—
১. বাংলাদেশ কি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছে?
2. যদি চেয়ে থাকে, তাহলে ঢাকা কী কারণ দেখিয়েছে?
3. ভারত সরকার কী জবাব দিয়েছে?
উত্তরে কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে প্রবেশের আগে বাংলাদেশে সংঘটিত কিছু অপরাধের ভিত্তিতেই তার প্রত্যর্পণ চাওয়া হয়েছে। তবে ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে কোনো জবাব দেয়নি।
এর আগেও, গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক চিঠি পাঠায়। ভারত সরকার তখন সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছিল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের পাঠানো সাম্প্রতিক চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, “আমরা চিঠি পেয়েছি, তবে এর আইনি দিকগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।” তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি ভারত সরকার।
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের পর বাংলাদেশে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ভারতও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে একে “দুর্ভাগ্যজনক” বলে মন্তব্য করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকার অভিযোগ করেছে যে, ভারতের মাটি থেকে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য সম্প্রচারই সাম্প্রতিক অস্থিরতার মূল কারণ। এ নিয়ে ঢাকা ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।