ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি: পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রসহ দেশজুড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে দ্রুতই দৃশ্যমান সাফল্য আসবে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশ্বাস দেন। এ সময় তিনি জানান, পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি বিভিন্নভাবে অস্ত্র বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তবে সরকার গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এ বিষয়ে অবগত রয়েছে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৬ বছরে যাদেরকে রাজনৈতিকভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তাদের অনেকেই অস্ত্র জমা দেননি। যদিও অধিকাংশ লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ইতোমধ্যে পুলিশ জব্দ করেছে, তবে লুট হওয়া বেশ কিছু অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এসব অস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনীর কার্যকর অভিযান চালানো হবে এবং জনগণের জন্য হুমকিস্বরূপ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে। এ বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দ্রুত নির্দেশনা দেওয়া হবে। আপনারা শিগগিরই এর দৃশ্যমান সাফল্য দেখতে পাবেন।”
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে মিন্টো রোডে অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে দ্রুত অভিযান চালাতে হবে।
এর আগে, রাতে আব্দুল হান্নান মাসউদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট দেন। প্রথম পোস্টে তিনি লেখেন,
“আমার জন্মভূমি হাতিয়ায় সাবেক এমপি জলদস্যু মোহাম্মদ আলীর বাসা থেকে ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। প্রশাসন আছে, কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্রও আছে। আমার ভাইদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, আমি যাচ্ছি। হয় জন্মভূমি, নয় মৃত্যু। দোয়া করবেন।”
দ্বিতীয় পোস্টে তিনি লেখেন,
“স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে যাচ্ছি, সেখানে অবস্থান করবো রাত সাড়ে ১২টা থেকে। ওনারা ঘুমাবে, আর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের ওপর গুলি চালাবে। যারা সঙ্গ দেবেন, আসতে পারেন।”
পরে শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলামোটর থেকে রওনা দিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। রাত পৌনে ১টার দিকে মিন্টো রোডের মাথায় বসে পড়েন তারা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের আশ্বস্ত করেন যে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অপরাধীদের গ্রেফতারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি জনগণের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে উঠলে তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।”
উপদেষ্টার আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় এবং মিন্টো রোড ছেড়ে চলে যায়।