সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্যের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে বুলডোজার কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়:
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে শেখ হাসিনার ফেসবুক লাইভের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম ফলক ভেঙে ‘বিজয়-২৪’ নামকরণ করে। পরে ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হলসহ ক্যাম্পাসজুড়ে মুজিব পরিবারের নামের বিভিন্ন গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন মুছে ফেলা হয়। এছাড়া জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের নামে নির্মাণাধীন হলের নামও পরিবর্তন করা হয়।
খুলনা:
খুলনা নগরীর ময়লাপোতা মোড়ের শেরে বাংলা রোডে অবস্থিত ‘শেখবাড়ি’ খ্যাত ভবনটি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। তাদের দাবি, নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো চিহ্ন থাকবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও শেখ মুজিবুর রহমানের নামে থাকা স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। মুছে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন গ্রাফিতি।
রংপুর:
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কারমাইকেল কলেজসহ শহরজুড়ে বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে।
বরিশাল:
ছাত্র-জনতার ব্যানারে বরিশালের কালিবাড়ি রোড এলাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় ভবনে। ভাঙচুর করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বরিশালের বাসভবন।
ভোলা:
ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরা শহরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালেও ভাঙচুর চালানো হয়। পরে জেলা পরিষদ ও সদর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সেও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল।
চট্টগ্রাম:
উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও। প্রেসক্লাব মোড়ে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে। জামালখান মোড়েও ফ্যাসিবাদকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড় থেকে মশাল মিছিল বের করে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা। পরে, পিটিআই মোড়ে অবস্থিত কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে আগুন ও বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নাটোর:
নাটোর শহরের কান্দিভিটায় সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতেও আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুজিব মুর্যাল’ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ভাঙচুর করা হয়েছে নগরের সার্কিট হাউস মাঠ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও।
সিলেট:
সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধরা। পরে, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনাতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
অন্যান্য জেলা:
ছাত্র-জনতার ব্যানারে যশোরের অন্তত ৭টি জায়গায় ভাঙা হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলায় ভাঙচুর ও মশাল মিছিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফেসবুক লাইভে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়ে এই বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।